islamkingdomfacebook islamkingdomtwitte islamkingdomyoutube


সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করার গুরুত্ব


11404
পাঠ সংক্ষেপ
খুতবায় যা থাকবে : ১ - আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকারের অর্থ ও তাৎপর্য বর্ণনা, ২ - ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক বহিরাগত আচার-আচরণ থেকে হুঁশিয়ার করা, ৩ - অসৎকাজে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের বিভিন্ন পর্যায় বর্ণনা করা

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَاشَرِيْكَ لَهُ مُخْلِصاً لَهُ الدِّيْنَ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ الصَّادِقُ الْأَمِيَنُ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَالتَّابِعِيْنَ لَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيِنِ، وَسَلَّمَ تَسْلِيْماً كَثِيْراً، أَمَّا بَعْدُ :

সৎকাজ, সে তো মুমিনের চিরসঙ্গী তবে,

যাকিছু অসৎ তাও বাসা বাঁধে, কারও কারো জীবনে

অথবা সমাজ-বক্ষে দাবি করে পরিবর্তন, আর তখন

উঠে দাঁড়ায় মুমিন শক্ত হাতে, কখনো ঝড়ের ন্যায়,

বিছিয়ে দিতে দিগন্তজুড়ে শুভ্রতার নিটোল চাদর।

সুপ্রিয় মুসল্লীবৃন্দ! আল্লাহ তাআলা যতগুলো ইবাদতের নির্দেশ দিয়েছেন,তন্মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো সৎকাজের নির্দেশ এবং অসৎকাজে বাধা প্রদান। তাই আজ আমরা এই ইবাদতের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করব ইনশা’আল্লাহ।

সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, সাহাবী সাহল বিন সা‘আদ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

(لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ)

‘তোমার মাধ্যমে যদি একটি লোককেও আল্লাহ হিদায়েত দান করেন, তা হবে লাল উটনীর চেয়েও উত্তম’ (বুখারী ও মুসলিম)।

প্রিয় ভাইয়েরা! কারো হিদায়েতের জন্য কাজ করার ফযীলত এভাবেই আমাদের প্রিয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন। মানুষের হিদায়েতের জন্য কাজ করার অর্থই হলো আল্লাহ যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তা করতে বলা, যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বাধা দেয়া। এরই নাম ‘আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকার’ বা সৎকাজে নির্দেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা।

আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। বরং, এ তো নবুওয়াতের উত্তরাধিকারতূল্য। কিন্তু আফসোস! ইবলীস মুসলমানদের অনেককেই ধোঁকায় ফেলে রাখে। তাদের কানে-কানে বলে যায়, বিশেষভাবে যিকর ধরো, নামায পড়ো, কিরাত পড়ো, রোযা রাখো, দুনিয়া-বিমুখ হও ইত্যাদি। অন্যেরা কি করল আর কি করল না, তা নিয়ে তোমার ভাবার দরকার নেই। আর তারা চোখ-কান বন্ধ করে নিরুদ্বিগ্ন সময় কাটাতে থাকে। আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটির কথা একেবারেই ভুলে যায়। যারা এরূপ করে তারা আম্মিয়াদের সত্যিকার ওয়ারিশের কাছে সবচেয়ে কম দীনদার। কেননা দীন হলো আল্লাহর নির্দেশ পালন করা। তাই বান্দার ওপর আরোপিত আল্লাহর হক আদায় করা থেকে যারা বিরত থাকে তারা তো গুনাহগার ব্যক্তির চাইতেও অধম। কেননা কোনো নির্দেশ অমান্য করার অপরাধ পাপকর্মে লিপ্ত হওয়ার চাইতে বেশি বড় অপরাধ।

এ অপরাধ আরো মারাতœক হবে, যদি তরুণ উলামা সমাজ অথবা যুবশ্রেণী সমাজসংস্কারের পথ থেকে সরে গিয়ে নিজদেরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, সমাজকে ছেড়ে দেয় দুষ্কৃতিকারীদের হাতে, অপসংস্কৃতির শিল্পী ও তারকাদের হাতে, ক্রীড়াঙ্গনের লোকদের হাতে, যারা তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য প্রতিযোগিতায় মত্ত থাকে সারাণ। আর আমরা বসে বসে অবস্থা দেখে কাঁদি আর বলি, ‘যামানা নষ্ট হয়ে গেছে। দিনকাল খারাপ হয়ে গেছে’। আমরা যামানাকে দোষ দিই। পান্তরে প্রকৃত দোষ তো আমাদেরই। কেননা আমরা নীরব, চুপচাপ বসে থাকি। পরিশেষে যখন অবস্থা নাগালের বাইরে চলে যায়, খারাবী ছড়িয়ে পড়ে চতুর্দিকে, তখন চমকে উঠি, অন্য দশজন সাধারণ মানুষের মতোই। আর তখন যা ভালো তা করতে নিষেধ করি, যা মন্দ তা করতে শুরু করি। সংস্কার ও ইসলাহের দায়িত্বে অবহেলা করার কারণেই আজ আমাদের এ অবস্থা।

এমন অনেক যুবককে দেখা যায়, যারা বেশভূষায় আল্লাহওয়ালা। কিন্তু তারা সমুদ্রের ফেনার মতো নিষ্ফল ও অকার্যকর। তাদের চোখের সামনেই একটার পর একটা অন্যায় কাজ সংঘটিত হয়, অথচ দাওয়াতের সকল সুযোগ তাদের সামনে উন্মুক্ত, সংস্কারের সকল মাধ্যম তাদের নাগালের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও তারা অলস, গাফেল অবস্থায় বসে থাকে। হৃদয়ে কোনো হিম্মত খুঁজে পায় না। আল্লাহর দীনের হুরমত ও মর্যাদা বিনষ্ট হওয়ায় তাদের মধ্যে আদৌ কোনো ভাবান্তর সৃষ্টি হয় না, পরিবর্তন আসে না তাদের কার্যধারায়। এটা খুবই দুঃখজনক, আফসোসের বিষয়।

ভাইয়েরা আমার! আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে বলেছেন:

{وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ}

‘আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত যারা আহ্বান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম’ (সূরা আলে ইমরান: ১০৪)

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা করতে হলে আরো দুটি আয়াতকে সামনে রাখতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

{كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ}

‘তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে’ (সূরা আলে ইমরান: ১১০)

লক্ষ্য করুন, ১ম আয়াতে আল্লাহ তাআলা এই উম্মত থেকে একটি দলকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা প্রদানে নিয়োজিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

আর ২য় আয়াতে প্রকাশ করেছেন যে, এ উম্মতের সর্বোত্তম উম্মত হওয়ার কারণই হলো মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকা এবং সৎকাজের নির্দেশ দান ও অসৎ কাজে বাধা প্রদান করা।

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, যে আল্লাহর নিষেধের প্রাচীরকে পদদলিত হতে দেখে, দীনকে পরিত্যক্ত হতে দেখে এবং তার রাসূলের সুন্নতকে বর্জিত হতে দেখে, এরপরও শীতল হৃদয়ে চুপচাপ বসে থাকে, সে তো বোবা শয়তান। যেমনিভাবে খারাব উক্তিকারী বাকপটু শয়তান।

দীনের বিপদ তো এসব লোকের কারণেই আসে। যারা খাওয়া-দাওয়া আর নেতৃত্ব ঠিক রাখতে ব্যস্ত, অথচ দীনের ব্যাপারে কোনো পরোয়া নেই। যাদের ব্যক্তিগত সম্মান ও ধন-সম্পদের েেত্র পান হতে চুন খসলেই অস্থির হয়ে পড়ে। তা প্রতিকারের যতরকম উপায় আছে, অবলম্বন করে। এবং যথাসম্ভব বাধা দিতে এগিয়ে আসে। অথচ, দীনের কিছু হলে তারা চুপচাপ থাকে।

এরাই আল্লাহর গজবে নিপতিত হয়। এদেরকে পৃথিবীতে অনেক বড় বিপদে ফেলে রাখা হয়, অথচ তারা বুঝতেই পারে না। আর তা হলো অন্তরের মৃত্যু ঘটা। কারণ অন্তর জীবিত থাকলে তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিপে কোনো কিছু হলে তা রেগে উঠবে। দ্বীনের জন্য প্রতিশোধ স্পৃহায় টগবগ করে উঠবে। অথচ তা তো হয় না। তাহলে বুঝতে হবে তাদের অন্তরের মৃত্যু ঘটেছে।

প্রিয় ভাইয়েরা! আমাদের আশ-পাশে জানা-শোনার মধ্যে যেসব অন্যায় হয়, আমরা সেসবের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবো। হয়ত চুপ থাকার কারণে, নতুবা বাধা না দেয়ার কারণে। কিংবা এসব অন্যায় সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণ না করার কারণে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

(مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَراً فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيْمَانِ)

‘যে ব্যক্তি কোনো অন্যায় হতে দেখে, সে যেন হাত দিয়ে তা পরিবর্তন করে দেয়। তা সম্ভব না হলে জিহ্বা দিয়ে, তাও যদি সম্ভব না হয় তবে অন্তর দিয়ে, আর এটা হলো সর্বনিম্ন ঈমানী কর্তব্য’ (মুসলিম)।

হাদীস থেকে বোঝা যায় যে, অন্যায় কাজে বাধা দেয়ার তিনটি পর্যায় রয়েছে।

১. হাত দিয়ে বাধা দেয়া বা সরাসরি হস্তপে করা।

২. কথার মাধ্যমে বাধা দেয়া বা মৌখিকভাবে নিষেধ করা।

৩. অন্তরে ঘৃণা করা এবং বাধা দেয়ার পরিকল্পনা করা।

যার যতটুকু মতা, সে ততটুকু প্রয়োগ করবে। তবে তাৎণিক বাধা দেয়াই মৌলিক কর্তব্য।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকার-এর গুরুত্ব এতণে নিশ্চয় আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে

গেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

{: عَاقِبَةُ الْأُمُورِ الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ وَلِلَّهِ}

‘তারা এমন লোক যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তি-সামর্থ্য দান করলে তারা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে। প্রত্যেক কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত’ (সূরা আল হজ: ৪১)

এ আয়াতটি আল্লাহ তাআলা সাহাবীদের প্রশংসায় অবতীর্ণ করেছেন। এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, আমর বিল মারূফ ওয়া নাহী আনিল মুনকার অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যা উম্মতকে ধ্বংস থেকে রা করে। পৃথিবীতে শক্তি-সামর্থ্য ও আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হওয়ার জন্যও এটি একটি শর্ত।

আল্লাহ তাআলা যখন মুমিনদেরকে নিরাপদ করে দেন। যখন তাদেরকে কোনো ভূখণ্ডে স্বাধীনভাবে ধর্মকর্ম পালনের সুযোগ করে দেন, তখন তারা যথার্থভাবে নামায আদায় করে, যাকাত দেয় এবং সৎকাজের আদেশ করে ও অসৎ কাজে বাধা দেয়। এটাই হল মুমিনদের বৈশিষ্ট্য। আর এ বৈশিষ্ট্য থেকে যদি মুমিনরা সরে আসে, তাহলে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় আল্লাহ মুমিনদের ওপর থেকে তার নুসরত ও সাহায্য উঠিয়ে নেন, যতণ না তারা নতুন উদ্যমে দায়িত্ব পালনের শপথ নেয়।

আমর বিল মারূফ এর গুরুত্ব যেমন বেশি, তেমনি এর প্রতি অবহেলার কারণে সৃষ্ট বিপদের পরিমাণও বেশি। ফিতনা বেড়ে যাওয়া, সৎ-অসৎ নির্বিশেষে সকলের ওপর আযাব আসা, আল্লাহর দয়া ও সাহায্য থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং অন্যায়-অনাচার ও বিদ‘আতের সয়লাব হওয়া -ইত্যাদি সবই এর প্রতি অবহেলার ফলাফল।

সমাজে ছোট-বড় যত সমস্যা হয়, তার সিংহভাগই এ কাজ ছেড়ে দেয়ার কারণে হয়। ভেবে দেখুন, যদি সমাজের তরুণ ও যুবকরা নিজদেরকে এ কাজে জড়িত করত, যদি সমাজ সংশোধনে এগিয়ে আসত, সৎকাজের নির্দেশ দিত এবং অসৎকাজে বাধা দিত, তাহলে সমাজের অপরাধ কত শতাংশ কমে যেত।

এ কাজে অবহেলাকারীর প্রতি হুমকি দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

(وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَأْمُرُنَّ بالمَعْرُوفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ أو لَيُوشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَبْعَثَ عَليْكُمْ عِقَاباً مِنْهُ فَتَدْعُونَهُ فَلا يَسْتَجِيبُ لَكُمْ)

‘আল্লাহর কসম! তোমরা যদি সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা প্রদান না করো, তাহলে শীঘ্রই তোমাদের ওপর আল্লাহর আযাব আসার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তোমরা দু‘আ করবে, কিন্তু তা কবুল হবে না’ (তিরমিযী)।

সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে যয়নব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করে বলেছেন, ‘আযাব আসলে আমরাও কি ধ্বংস হব? অথচ আমাদের মধ্যে অনেক ভালো মানুষও আছে? রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘হ্যাঁ, যখন অন্যায় বেড়ে যাবে তখন সবাই ধ্বংস হবে’ (বুখারী ও মুসলিম)।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আল্লাহ তাআলা বলেন :

{فَلَوْلَا كَانَ مِنَ الْقُرُونِ مِن قَبْلِكُمْ أُولُو بَقِيَّةٍ يَنْهَوْنَ عَنِ الْفَسَادِ فِي الْأَرْضِ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّنْ أَنجَيْنَا مِنْهُمْ وَاتَّبَعَ الَّذِينَ ظَلَمُوا مَا أُتْرِفُوا فِيهِ وَكَانُوا مُجْرِمِينَ. وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَىٰ بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا مُصْلِحُونَ.}

কাজেই, তোমাদের পূর্ববতী জাতিগুলির মধ্যে এমন সৎকর্মশীল কেন রইল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিত তবে মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রা করেছি। আর পাপিষ্ঠরা তো ভোগ বিলাসে মত্ত ছিল যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেয়া হয়েছিল। আসলে তারা ছিল মহা অপরাধী। আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যে, জনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন, সেখানকার লোকেরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও’ (সূরা হূদ: ১১৬)।

ল্য করুন! এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা ‘মুসলিহূন’ বলেছেন, ‘সালিহূন’ বলেননি। যারা নিজেরা সৎকর্ম করেই ান্ত হন তারা সালিহ। আর যারা অন্যকে সৎকর্ম করতে বলেন, তারা মুসলিহ। এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, একটি জনগোষ্ঠীর ধ্বংসের হাত থেকে রা পাওয়ার উপায় হলো সেই জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরকে ‘মুসলিহ’ বা সংস্কারক হওয়া। শুধু ‘সালিহ’ তথা নিজে সৎকর্মশীল হওয়া নয়।

বরং, সালিহ যদি মুসলিহ না হন, তাহলে তিনিও ধ্বংস হবেন। কুরআন ও হাদীস থেকে এটাই বোঝা যায়। হ্যাঁ, যদি তিনি মুসলিহ হন, তাহলে তার ইসলাহ বা সংশোধনমূলক কাজ তাকে ধ্বংসের হাত থেকে রা করবে। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন :

{لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِن بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُودَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ذَٰلِكَ بِمَا عَصَوا وَّكَانُوا يَعْتَدُونَ. كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَن مُّنكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ}

বনী-ইসলাঈলের মধ্যে যারা কাফির, তাদেরকে দাউদ ও মরিয়মতনয় ঈসার মুখে অভিসম্পাত করা হয়েছে। এটা একারণে যে, তারা অবাধ্যতা করত এবং সীমালংঘন করত। তারা পরস্পরকে মন্দ কাজে নিষেধ করত না, যা তারা করত। তারা যা করত তা অবশ্যই মন্দ ছিল (সূরা আল মায়েদা: ৭৮-৭৯)

আল্লাহ আমাদের যথার্থরূপে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِيْ الْقُرْآنِ الْعَظِيْمِ وَنَفَعْنِيْ وَإيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ اْلآيَاتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيْمِ, أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوْهُ إنَّهُ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ .

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِيْنَ، وَلَا عُدْوَانَ إِلَا عَلَى الظَّالِمِيْنَ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ :

প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! কোন্টা অপরাধ আর কোন্টা অপরাধ নয়, কোন্টাতে বাধা দেয়া যায় আর কোন্টাতে দেয়া যায় না, আসুন এবার সেসব বিষয় বিস্তারিত জেনে নিই।

ইমাম গাযযালী রহ. অপরাধকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন।

১. যেসব অপরাধ চূড়ান্ত পর্যায়ের, এবং অন্যের তির কারণ হয়। যেমন, হত্যা, ব্যাভিচার ইত্যাদি। এসব অপরাধের বিচার শরীয়তকর্তৃক নির্দিষ্ট শাস্তি হদ বা তা’যীর। এসব অপরাধের বিচারের দায়িত্ব সরকারের, ব্যক্তি বিশেষের নয়।

২. যেসব অপরাধ প্রকাশ্য এবং কোনো ব্যক্তি তাতে বর্তমানে জড়িত। যেমন, কোনো পুরুষ নিরেট সিল্কের কাপড় পরল, কিংবা মদ নিয়ে পান করতে বসে গেল। এসব অপরাধ যথাসম্ভব দমন করার দায়িত্ব জনগণের প্রত্যেকের, তবে খেয়াল রাখতে হবে অপরাধ দমন করতে গিয়ে উক্ত অপরাধ থেকে বড় ধরনের বা সমপর্যায়ের কোনো অপরাধ যেন কায়েম হয়ে না যায়।

৩. যেসব অপরাধ সম্ভাবনাময় ও সন্দেহযুক্ত। যেমন কেউ মদপান করার জন্য তা ক্রয় করে আনল, অথবা বাসায় তা প্রস্তুত করল, অথচ মদ পান করল না। এসব অপরাধ দমনে কেবল ওয়ায ও উপদেশ দিয়ে যাবে, অন্য কিছু করা যাবে না।

বড় ধরনের শাস্তি বা মারধর প্রশাসন বা ব্যক্তি বিশেষ কারো জন্যই বৈধ নয়, যতণ না অপরাধটি সে ব্যক্তি থেকে বারবার সংঘটিত হয়, এবং অপরাধ সংঘটনের সব প্রস্তুতি সে নিয়ে ফেলে আর সঠিক সময়ের অপো করতে থাকে।

যেমন মহিলা টয়লেটের সামনে বখাটেরা দাঁড়িয়ে থাকল। এতে যদিও সরাসরি কোনো অপরাধ হচ্ছে না, কিন্তু অপরাধ সংঘটনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে। যেমনভাবে আমরা জানি যে, কোনো নারীর সাথে একাকী সময় কাটানো একটা অন্যায়। যদিও সরাসরি তা কোনো অন্যায় নয়, কিন্তু বড় একটি অন্যায়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে এটাকেও সরাসরি অন্যায় বলা হবে। আর অপরাধের জোর সম্ভাবনাও অপরাধ। সে হিসেবে মহিলা টয়লেটের সামনে দাঁড়ানো সরাসরি অপরাধ বলেই গণ্য এবং এ জন্য প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

মুহতারাম হাযেরীন! অন্যায় কাজে বাধা দেয়ার জন্য চারটি শর্তের উপস্থিতি জরুরী।

১. শরীয়তে সেটা অপরাধ বলে গণ্য হওয়া, শরীয়তকর্তৃক তা নিষিদ্ধ হওয়া।

২. বাস্তবে তা সংঘটিত হওয়া। এখন যদি কেউ মদ পান করে ফেলে, অতঃপর সে বিষয়ে জানা যায়, তাহলে তা দমনের দায়িত্ব জনগণের নয়, প্রশাসনের। অনুরূপভাবে কেউ জানতে পারল যে, তার বন্ধু আজ রাতে মদের আসর বসাবে, তাহলে তাকে ওয়ায করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

যদি বন্ধু লোকটি মদ সম্পর্কিত বিষয়টি অস্বীকার করে বসে, তাহলে ওয়াযও করা যাবে না। কেননা তাতে অহেতুক একজন মুসলমানের প্রতি কুধারণা পোষণ করা হবে। আর এরূপ কুধারণা পোষণ করা নিষিদ্ধ।

তবে আমরা পূর্বে যেমনটা বললাম, মহিলা টয়লেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বা কোনো নারীর সাথে একাকী সময় কাটানো, এসব বাস্তবে সংঘটিত অপরাধতুল্য। কাজেই এসবে বাধা দেয়া যাবে।

৩. অপরাধটি গুপ্তচরবৃত্তি ছাড়াই প্রকাশ পাওয়া। কেউ যদি তার অপরাধ গোপন রাখে, ঘরের দরজা বন্ধ রাখে বা পর্দা টেনে দেয়, তাহলে তা উদঘাটন করতে চেষ্টা করা বৈধ নয়, আল্লাহ তাআলা এ ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি করতে নিষেধ করেছেন।

বর্ণিত আছে যে, ওমর রাযি. একবার এক ব্যক্তির ঘরে উঠে তাকে খারাপ কাজ করতে দেখলেন। অতঃপর তিনি লোকটিকে বাধা দিলেন। লোকটি বলল: ‘আমীরুল মুমিনীন! আমি যদি এক কারণে আল্লাহর অবাধ্যতা করে থাকি, তাহলে আপনি তিন কারণে তাঁর অবাধ্যতা করেছেন। ওমর রাযি. বললেন, সেগুলো কী? লোকটি বলল, ১. আল্লাহ বলেছেন,

{وَلَا تَجَسَّسُوا}

‘তোমরা অনুসন্ধান করো না। অথচ আপনি তা করেছেন।

২. আল্লাহ বলেছেন,

{وَأْتُوا الْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَابِهَا}

তোমরা ঘরে দরজা দিয়ে প্রবেশ করো। অথচ আপনি ছাদ দিয়ে ঢুকেছেন।

৩. আল্লাহ বলেছেন,

{لَا تَد خُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا}

তোমরা নিজদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশকালে অনুমতি প্রার্থনা করো এবং তাতে বসবাসকারীকে সালাম দাও। অথচ আপনি তা করেননি। তখন ওমর রাযি. তাকে ছেড়ে দিলেন এবং তাওবা করতে বললেন।

এখন প্রশ্ন হলো, কোন্টা প্রকাশ্য অপরাধ আর কোন্টা অপ্রকাশ্য অপরাধ তা নির্ণয়ের মানদণ্ড কী?

প্রিয় ভাইয়েরা! ভালো করে বোঝার চেষ্টা করুন। কেউ যদি দরজা বন্ধ করে দেয়ালের অভ্যন্তরে অপরাধ করতে থাকে, তাহলে তার অনুমতি ছাড়া সে অপরাধ অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে তার ঘরে প্রবেশ করা বৈধ হবে না। হ্যাঁ, যদি তা এতটুকু প্রকাশ পায় যে তা বাইরে থেকে বোঝা যায়, যেমন ঢোলের শব্দ, কিংবা মাতালের বাক্য বিনিময়, যা বাইরের লোকেরা শুনতে পায়, তাহলে ভেতরে ঢুকে ঢোল-তবলা ভেঙে ফেলা বা মদের আসর ভেঙে দেয়া বৈধ।

কখনো কখনো মদের বোতল ও গানের সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়। যদি কোনো ফাসিককে এভাবে কিছু লুকাতে দেখা যায়, তাহলে অন্য কোনো আলামত ছাড়া সেটা অনুসন্ধান করা বৈধ হবে না। কেননা সে মদও বহন করতে পারে আবার শরবতও। আর শরবতে তার প্রয়োজন থাকতে পারে। আল্লাহ তাআলা গোপন বিষয়গুলোকে আমাদের গোপন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে যারা নিজদের অপরাধ প্রকাশ করে, তাদের বাধা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। আর অপরাধ প্রকাশ করা বা তা প্রকাশিত হওয়া বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন শোনা, গন্ধ পাওয়া, দেখা, ছোঁয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে। মূল বিষয় হলো অপরাধ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা। আর এসব ইন্দ্রিয় জ্ঞানলাভে সহায়তা করে। কাজেই ফাসিক যা লুকাচ্ছে, যদি জানা যায় যে তা মদ, তাহলে তাকে বাধা দেয়া যাবে। তবে তাকে বলা যাবে না, কী লুকাচ্ছ দেখাও। কারণ এটা হবে তাজাসসুস বা দোষ অনুসন্ধান, যা নিষিদ্ধ। তাজাসসুসের ব্যাখ্যা হলো, সুস্পষ্ট আলামত অনুসন্ধান করা। সুস্পষ্ট আলামত যদি এমনিতেই প্রকাশ পায় তাহলে সে অনুযায়ী কাজ করা বৈধ কিন্তু সে আলামত অনুসন্ধানের কোনো অনুমতি নেই।

৪. অপরাধটি হতে হবে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে একটি সুস্পষ্ট ও স্বীকৃত অপরাধ। কোনো ইজতেহাদ বা গবেষণার ফল হিসেবে সাব্যস্ত অপরাধ নয়। যেসব মুনকার বা অপরাধ ইজতেহাদনির্ভর, বিভিন্ন মাযহাবের ইমামগণ যেসব ক্ষেত্রে ভিন-ভিন্ন ইজতেহাদী মতামত ব্যক্ত করেছেন, সেগুলো করতে বাধা দেয়ার জন্য কোনো পদপে নেয়া যাবে না।

অতএব শাফেঈ মাজহাবের অনুসারী কোন ব্যক্তি গুঁইসাপ বা গন্ডারের গোশ্ত খেলে, বা যে পশুতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা খেলে, কোনো হানাফী তাকে বাধা দিতে পারবে না। অনুরূপভাবে কোনো হানাফী খেজুরের নির্যাস বা নবীয পান করার কারণে কোনো শাফেঈ মতালম্বী তাকে বাধা দিতে পারবে না, যদি তা নেশা সৃষ্টিকারী না হয়। অনুরূপভাবে অন্যান্য মাসআলারও একই অবস্থা।

আল্লাহ আমাদের সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজে বাধা দেয়ার তাওফীক দান করুন।

মুহতারাম হাযেরীন! আসুন আমরা আমাদের পরিবারে, সমাজে, কর্মেক্ষে সর্বত্র এর ওপর আমল করি। আমরা সবাই যদি নিজ নিজ গণ্ডী থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাই, তাহলে সমাজের অধিকাংশ খারাপ কাজ নির্মূল হয়ে যাবে ইনশা’আল্লাহ।

আমরা যারা তরুণ ও যুবক, তারা যদি নিজদেরকে এ কাজে নিয়োজিত করি, তাহলে সমাজ থেকে বিদায় নেবে ইভটিজিং, সন্ত্রাস, ঘুষ, পরকীয়া, ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকাণ্ড। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন।

اَللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَارْضَ اللَّهُمَّ عَنِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ وَعَنْ آلِ نَبِيِّكَ الطَّيِّبِيْنَ الطَّاهِرِيْنَ وَعَنْ أَزْوَاجِهِ أُمُّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَعَنِ الصَّحَابَةِ أَجْمَعِيْنَ وَعَنِ التَّابِعِيْنَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنِ وَعَنَّا مَعَهُمْ بِمَنِّكَ وَكَرَمِكَ وَعَفْوِكَ وَإِحْسَانِكَ يَا أَرْحَمَ الْرَّاحِمِيْنَ.

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ভালো কাজের নির্দেশ দেয়ার এবং খারাপ কাজে বাধা দেয়ার তাওফীক দিন। আপনি আমাদেরকে আপনার দীনের পথে অবিচল রাখুন। আমাদেরকে ইখলাস পরিপন্থী সকল নিয়ত ও আমল থেকে হিফাযত করুন। আপনিই উত্তম হিফাযতকারী।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে মা করুন। আমাদের প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য, প্রত্য, পরো সব গুনাহ আপনি আপন গুণে মা করুন।

হে আল্লাহ! মুসলমানদের ইজ্জত ও কদর বাড়িয়ে দিন। আপনি ইসলামকে সমগ্র পৃথিবীতে বিজয়ী আদশর্দরূপে প্রতিষ্ঠিত করুন। আপনি ইসলামী আদর্শের অনুশীলন-অনুকরণ ব্যাপক করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সকল বৈধ প্রয়োজনগুলো পূরণ করে দিন। আমাদেরকে দারিদ্র্য থেকে রা করুন। আমাদের দেশকে দারিদ্র্য থেকে রা করুন। আপনি যে পথে চললে রাযিখুশী হন সে পথে আমাদের দেশের কর্ণধারদের পরিচালিত করুন। আমীন, ইয়া রাব্বালা আলামীন।

عبَادَ اللهِ رَحمكُمُ الله : (إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمْنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ.