اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ جَعَلَ الْقُلُوْبَ مَوَاطِنَ لِلْحُبِّ وَالْإِخَاءَ، وَالْكُرْهِ وَالْجَفَاءِ، أَحْمَدُهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى وَأَشْكُرُهُ وَهُوَ أَهْلٌ لِلشُّكْرِ وَالتَّقْدِيْسِ وَالثَّنَاءِ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِيْ السَّمَاء، وَأَشْهَدُ أَنَّ سَيَّدَنَا وَنَبِيَّنَا مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ أَفْضَلُ الرُّسُلِ وَالأَنْبِيَاءِ صَلَّىَ اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَىَ آلِهِ وَصَحْبِهِ وَمَنْ عَلَى نَهْجِهِ سَيْراً وَلِسُنَّتِهِ اقْتِفَاءً، أَمَّا بَعْدُ :
প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! সবাই নিজের ভালো চায়। কেউ অকল্যাণ চায় না। আল্লাহর রহমত-করুণা যে যতটুকু ভোগ করছে কেউ চায় না তা চলে যাক। বরং সবাই আরো অধিক পেতে আগ্রহী। যা কিছু খায়ের বা ভালো তা পেতে সবাই উদগ্রীব।
ইরশাদ হয়েছে
{فَأَمَّا الْإِنْسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ}
‘আর মানুষ তো এমন যে, যখন তার রব তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তাকে সম্মান দান করেন এবং অনুগ্রহ প্রদান করেন, তখন সে বলে, ‘আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন (সূরা আল-ফাজর : ১৫)।
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে
{وَلَئِنْ أَذَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنَّا رَحْمَةً ثُمَّ نَزَعْنَاهَا مِنْهُ إِنَّهُ لَيَئُوسٌ كَفُورٌ. وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ نَعْمَاءَ بَعْدَ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ ذَهَبَ السَّيِّئَاتُ عَنِّي إِنَّهُ لَفَرِحٌ فَخُورٌ. إِلَّا الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَئِكَ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ.}
‘আর যদি আমি মানুষকে আমার পক্ষ থেকে রহমত আস্বাদন করাই, অতঃপর তার থেকে তা কেড়ে নেই, তাহলে সে নিশ্চয় নিরাশ, অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়বে। আর দুঃখ-দুর্দশা স্পর্শ করার পর যদি আমি তাকে নিআমত আস্বাদন করাই, তাহলে সে অবশ্যই বলবে, ‘আমার থেকে বিপদ-আপদ দূর হয়ে গেছে, আর সে হবে অতি উৎফুল্ল, অহঙ্কারী। তবে যারা সবর করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যই রয়েছে মা ও মহা প্রতিদান’ (সূরা হূদ : ৯-১১)।
কল্যাণ কামনা,ভালো চাওয়া মানুষের প্রকৃতিগত অভ্যাস। তাই মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার একটি বড়ো মাধ্যম হলো নিজকে মানুষের কল্যাণকামী বানানো। যদি কোনো ব্যক্তি আপনাকে তার কল্যাণকামী বলে জানতে পারে তাহলে প্রকৃতিগতভাবেই সে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে। তাই দীনের স্বার্থে মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এ দিকটির প্রতি নজর রাখা অত্যন্ত জরুরী।
এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় গুরুত্বের দাবি রাখে। আর তা হলো,মানুষের অর্থসম্পদ হতে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখা। যুহদ অবলম্বন করা মানুষের ভালোবাসা প্রাপ্তির একটি মাধ্যম। হাদীসে এসেছে
(اِزْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ، وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّوكَ)
‘দুনিয়ার ব্যাপারে তুমি যুহদ অবলম্বন করো, তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন, আর মানুষের হাতে যা আছে তা থেকে যুহদ অবলম্বন করো তাহলে তারা তোমাকে ভালোবাসবে’ (ইবনে মাজাহ, সহীহ)।
কোনো ক্ষেত্রে মানুষ প্রথম সাক্ষাতেই একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। মনে হয় যেন দু’জনের মধ্যে বহু পুরাতন বন্ধুত্ব। এ ধরনের সম্পর্ককেও দীন চর্চা ও প্রচারের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো জরুরী। হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন
(الْأَرْوَاحُ جُنُوْدٌ مُجَنَّدَةٌ فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ وَمَا تَنَاكَرَ مِنْهَا اخْتَلَفَ)
‘রূহসমূহ একত্রিত সেনাবাহিনীর ন্যায়, এদের যারা পরস্পরে পরিচিত তারা একে অন্যের সাথে মিল-মহব্বতে থাকে। আর যারা অপরিচিত তারা থাকে ভিন্ন-ভিন্ন’ (বুখারী)।
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন: আত্মার জগতে যেসব আত্মা পরস্পরের মাঝে মিল দেখেছে তারা একে অন্যের নিকবর্তী হয়েছে। আর যারা অমিল দেখেছে তারা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থেকেছে। পৃথিবীতে এসে মানবদেহে সংযুক্ত হওয়ার পরও মানবাত্মার এই প্রকৃতি অব্যাহত থেকেছে।
ইমাম খাত্তাবী রহ. উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন,‘ভালো-মন্দ, সংস্কৃতিবান অথবা সংস্কৃতিহীন হওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকৃতির মানুষের মাঝে যে পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ দেখা যায় তার প্রতিই এ হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে’।
মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার প্রতি ইসলামের গুরুত্ব
মুহতারাম মুসল্লিয়ান! আল্লাহর খাতিরে, পরকালীন কল্যাণের আশায় মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার প্রতি ইসলাম খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের কল্যাণ কামনায় ও তাদের হৃদয় আকৃষ্ট করায় সর্বশ্রেষ্ঠ। আত্মীয়তার বন্ধন রা, অসহায় মানুষের বোঝা বহন, মেহমানদারি, বিপদে-আপদে পাশে গিয়ে দাড়ানো এসব কর্ম ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিত্যদিনের ঘটনা। উম্মুল মুমিনীন খাদীজা রাযি. বলেন
(إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ، وَتَحْمِلُ الْكَلَّ، وَتَكْسِبُ الْمَعْدُومَ، وَتَقْرِي الضَّيْفَ، وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ)
‘নিশ্চয় আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন, অসহায় মানুষের বোঝা বহন করেন, মেহমানকে আপ্যায়ন করেন এবং বিপদে-আপদে সহযোগিতা করেন’ (বুখারী)।
আনসার ও মুহাজির সাহাবীদের মাঝে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক ভ্রাতৃত্বের বন্ধন কায়েম করে দেয়া মুসলমানদের হৃদয়কে পরস্পরের সাথে জুড়ে দেয়ার একটি অত্যুজ্জ্বল উদাহরণ। জাবের রাযি. বর্ণনা করেন, আমরা একটি অভিযানে ছিলাম। এমতাবস্থায় জনৈক মুহাজির ব্যক্তি জনৈক আনসারী ব্যক্তির পেছনে চপেটাঘাত করলেন। এসময় আনসারী ব্যক্তি অনসারীদের সাহায্য চেয়ে ডাক দিলেন। অন্যদিকে মুহাজির ব্যক্তিও অন্যান্য মুহাজিরদের সাহায্য চেয়ে ডাক দিলেন। ব্যাপারটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গোচরীভূত হলে তিনি শুনে বললেন, ‘কী হয়েছে, জাহিলীযুগের আহ্বান কেন?’ সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! একজন মুহাজির ব্যক্তি একজন আনসারী ব্যক্তিকে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন : এ থেকে বিরত হও, কারণ এটা ঘৃণিত কাজ’। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই বিষয়টি শুনে বলে উঠল : ‘এমন একটি কাজ করা হলো! আল্লাহর কসম! আমরা যদি মদীনায় ফিরে যাই, তাহলে সম্মানিত লোকেরা অসম্মানিতদেরকে অবশ্যই বের করে দেবে’।
নবীজির কাছে সংবাদটি পৌঁছলে উমর রাযি. উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এই মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই’। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘ওকে ছেড়ে দাও নতুবা লোকজন বলাবলি করবে : মুহাম্মাদ তার সাথীদের হত্যা করছে। হিজরতের সময় মুহাজিরদের তুলনায় আনসারদের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে পরবর্তীকালে মুহাজিরদের সংখ্যা বেড়ে যায়’ (বুখারী ও মুসলিম)।
এ ঘটনা থেকে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদের মাঝে ঐক্য-ভ্রাতৃত্ব, পারস্পরিক মমত্ববোধ ও সৌহার্দ বজায় রাখার প্রতি কতটুকু আগ্রহী ছিলেন। তাই আমাদের উচিত হবে, মানুষে-মানুষে ঝগড়া-বিবাদের সকল উপল্য দূরিভূত করা। পরস্পরে বিভেদ সৃষ্টি হয় এমন যেকানো কাজ শুরুতেই থামিয়ে দেয়া। তাহলেই পরস্পরে মিল-মহব্বতের পরিবেশ কায়েম থাকবে। একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হৃদয় নিয়ে মানুষ জীবনযাপন করবে।
মানুষের মাঝে পরস্পরে ঘৃণার উদ্রেক করে, একজনকে আরেকজন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এমনসব কর্ম থেকে একজন মুমিনকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। যারা ঘৃণা ছড়ায়, পরস্পরে বিভাজন সৃষ্টি করে তাদের ব্যাপারে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুঁশিয়ারিবাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন ‘হে লোকসকল! নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে কিছু মানুষ রয়েছে, যারা মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়’ (বুখারী)।
এর অর্থ মানুষের হৃদয়কে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে রাখার প্রয়োজনে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা ঘৃণার সৃষ্টি করে, মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে ঠেলে দেয়, ইসলামী আদর্শ চর্চা থেকে দূরে ঠেলে দেয়। তবে এরূপ করতে বৈধতার সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।
প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! আকীদা-বিশ্বাসই হলো পরস্পরকে পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট করে রাখার বড় মাধ্যম। আসহাবে কাহফ আকীদাগত কারণেই পরস্পরে জুড়ে থেকেছেন। জালিম বাদশাহর অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য যুগপৎভাবে গুহায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মূসা আ. এর জীবনের একটি ঘটনা পবিত্র কুরআনে এভাবে এসেছে
{وَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ يَسْعَى قَالَ يَا مُوسَى إِنَّ الْمَلَأَ يَأْتَمِرُونَ بِكَ لِيَقْتُلُوكَ فَاخْرُجْ إِنِّي لَكَ مِنَ النَّاصِحِينَ . فَخَرَجَ مِنْهَا خَائِفًا يَتَرَقَّبُ قَالَ رَبِّ نَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ.}
‘আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে একজন লোক ছুটে আসল। সে বলল, হে মূসা, নিশ্চয় পারিষদবর্গ তোমাকে হত্যার পরামর্শ করছে, তাই তুমি বেরিয়ে যাও, নিশ্চয় আমি তোমার জন্য কল্যাণকামীদের একজন’।তখন সে ভীত প্রতীারত অবস্থায় শহর থেকে বেরিয়ে পড়ল। বলল, ‘হে আমার রব, আপনি যালিম কওম থেকে আমাকে রা করুন’ (সূরা আল কাসাস:২০-২১)।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আকীদা ও বিশ্বাসগত কারণেই লোকটি মুসা আ.-এর কাছে ছুটে আসে এবং ফিরআউনী ষড়যন্ত্র সম্পর্কে তাঁকে সতর্ক করে দেয়। তাঁকে মিসর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলে।
উল্লিখিত আয়াতে আরেকটি বিষয় লণীয়। তা হলো একজন মুমিনের ইতিবাচক ব্যক্তিত্ব। অর্থাৎ মুমিনের একটি গুণ হলো ক্রিয়াশীলতা। ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা পরিত্যাগ করে অন্যের উপকারে দৌড়ে যাওয়া। শুধু নিজের কল্যাণ নয় বরং অন্যের কল্যাণেও দীপ্তপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে আসা। এর অন্যথা হলে একজন মুমিনকে ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারি বলা যাবে না বরং সে হবে নেতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী, যে দীনের ও সমাজের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারে না। মানুষের ভালোবাসা ও মহব্বত অর্জনেও সে হয় দারুনভাবে ব্যর্থ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে হিফাযত করুন।
অন্য একটি ঘটনা আল কুরআনে এভাবে এসেছে
{وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ . اتَّبِعُوا مَنْ لَا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُمْ مُهْتَدُونَ . وَمَا لِيَ لَا أَعْبُدُ الَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ . أَأَتَّخِذُ مِنْ دُونِهِ آَلِهَةً إِنْ يُرِدْنِ الرَّحْمَنُ بِضُرٍّ لَا تُغْنِ عَنِّي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَلَا يُنْقِذُونِ . إِنِّي إِذًا لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ . إِنِّي آَمَنْتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُونِ .}
‘আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলল, ‘হে আমার কওম! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর। তোমরা তাদের অনুসরণ কর যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না আর তারা সৎপথপ্রাপ্ত’। ‘আর আমি কেন তাঁর ইবাদত করব না যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে’। ‘আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য ইলাহ গ্রহণ করব? যদি পরম করুণাময় আমার কোন তি করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না’। ‘এরূপ করলে নিশ্চয় আমি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত হব’। ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোন’ (সূরা ইয়াসীন:২০-২৫)।
দীনে তাওহীদ প্রচারের জন্য আগত লোকদের অনুসরণে নিজ গোত্রের লোকদেরকে উৎসাহ দেওয়ার ঘটনা আকীদা ও বিশ্বাসের কারণেই ঘটেছে।
প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার জন্য মৌলিক কিছু গুণ রয়েছে, যা অর্জিত হলে দীনের খাতিরে মানুষকে কাছে টানা, মানুষের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা কায়েম রাখা সম্ভব হয়। এসব গুণের মধ্যে প্রধান হলো, আল্লাহর প্রতি সত্যিকার অর্থে মুখাপেক্ষী হওয়া, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আমাদের পূর্বসূরীদের আমল-আখলাকসমূহ ভালো করে জানা এবং যথার্থরূপে তার ওপর আমল করা।
তন্মধ্যে একটি হলো মানুষের প্রতি দয়া ও করুণা প্রদর্শণ করা। কর্কশ ও কঠিন ব্যবহার বর্জন করা এবং মানুষের সাথে বিনম্র আচরণ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দয়া-করুণা ও বিনম্র আচরণের কারণেই মানুষের হৃদয় তাঁর প্রতি আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন। মানুষকে তাঁর কাছে ধরে রাখতে পেরেছিলেন। আল কুরআনে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
{فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ}
‘অতঃপর আল্লাহর প থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং তাদেরকে মা কর এবং তাদের জন্য মা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আলাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১৫৯)।
মানুষের প থেকে আসা অন্যায় আচরণ, গালমন্দ, ভর্ৎসনা ও রূঢ় ব্যবহার প্রভৃতির জন্য মানুষকে মা করে দেয়া একটি মহৎ গুণ, যা মানুষকে আকৃষ্ট না করে পারে না। ইরশাদ হয়েছে
{فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ}
‘সুতরাং তাদেরকে মা কর এবং তাদের জন্য মা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১৫৯)।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকাও মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার জন্য একটি জরুরী গুণ। অপরিচ্ছন্ন ও অগোছালো ব্যক্তির প্রতি প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ আকর্ষণ অনুভব করে না। তাই এ বিষয়টিকেও গুরুত্বের সাথে নিতে হবে।
আরো কতিপয় মাধ্যম :
১ হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় মানুষের সাথে কথা বলা এবং দেখা-সাক্ষাৎ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সদা হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় থাকতেন। হাসিমুখে মানুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা বন্ধুত্ব সৃষ্টির একটি বিশ্বজনীন পদ্ধতি। হাদীসে এসেছে
(تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ)
‘তোমার ভাইয়ের সম্মুখে তোমার মুচকি হাসি একটি সাদকা’ (তিরমিযী, সহীহ)।
২.দেখা-সাক্ষাতে মুসাফাহা বা করমর্দন করা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের সাথে মুসাফাহা করতেন আর সাহাবীগণও তাঁর সাথে এবং পরস্পরে মুসাফাহা করতেন। হাসান আল বাসরী রহ. বলেন, ‘মুসাফাহা মুহব্বত বাড়িয়ে দেয়’।
৩. অন্যের দুঃখ-কষ্ট-অভিযোগ ধৈর্যসহ শোনা এবং ভালো পরামর্শ দেয়া : মানুষের হৃদয়ের বন্ধ দরজা উন্মুক্ত করার এটি একটি বড় মাধ্যম।
৪. মানুষের সাথে মেলা-মেশা করা : হাদীসে এসেছে
(الْمُؤْمِنُ الََّذِيْ يُخَالِطُ النَّاسَ وَيَصْبِرُ عَلَى أَذَاهُمْ خَيْرٌ مِنَ الْمُؤْمِنِ الَّذِيْ لَا يُخَالِطُ النَّاسَ وَلَا يَصْبِرُ عَلَى أَذَاهُمْ)
‘যে মুমিন মানুষের সাথে মিশে এবং তাদের দেয়া কষ্ট-যাতনায় ধৈর্যধারণ করে সে ঐ মুমিন থেকে উত্তম যে মানুষের সাথে মিশে না এবং তাদের দেয়া কষ্টযাতনায় ধৈর্যধারণ করে না’ (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)।
৫. মানুষের উপকার করা: হাদীসে এসেছে :
(وَاللََّهُ فِيْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِيْ عَوْنِ أَخِيْهِ‘)
আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে ততণ পর্যন্ত সাহায্য করতে থাকেন যতণ পর্যন্ত বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্য সহযোগিতা করতে থাকে’ (মুসলিম)।
ভালো কাজের প্রতি মানুষকে উৎসাহ প্রদান করা এবং এ ব্যাপারে তাদের অনুভূতিকে নাড়া দেয়া, তাদের রূঢ় ব্যবহারে ধৈর্যধারণ করা, মানুষের বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়ানো, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হাসি-ঠাট্টা করা, কারো ভুলের প্রতি কঠিন দৃষ্টি না দেয়া, কর্মসম্পাদনে সক্রিয় ও উদ্যমী হওয়া, কোনো ব্যক্তিকে তার সামর্থের বাইরে কোনো কাজের দায়িত্ব না দেয়া, বিভিন্ন ঘটনা কুরআন ও হাদীসের সত্য ঘটনাবলী সমকালীন খবরাখবরের সাথে যুক্ত করে উল্লেখ করা, দয়াশীল ও অনুগ্রহকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া প্রভৃতি বিষয় মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার পরীতি পদ্ধতি। তাই এসবের প্রতি গুরুত্বারোপ করে দীনের খাতিরে মানুষের হৃদয় জয় করার জন্য আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে।
মনে রাখবেন, মানুষের কল্যানে, অভাবে-অনটনে ইহসান করা মানুষের হৃদয় জয় করার একটি বড় মাধ্যম। জনৈক আরব কবি বলেন:
(أَحْسِنْ إِلَى النَّاسِ تَسْتَأَسِرْ قُلُوْبَهُمْ * فَطَالَمَا اسْتَأْسَرَ الْإِنْسَانَ إِحْسَانُ)
‘ইহসান করো মানুষের প্রতি, বন্দি করতে পারবে তাদের হৃদয় যুগযুগ ধরেই তো মানুষকে বন্দি করেছে ইহসান।
আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে
{الَّذِينَ يُنْفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ ‘}
যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে মা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৪)।
প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! মানুষের সাথে ওঠাবসা না করা এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী জীবনযাপন করা একজন মুসলমানের কাঙ্খিত চরিত্র হতে পারে না। কারণ মুমিনরা পরস্পরে এক ও অভিন্ন শরীরের ন্যায়। হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘ভালোবাসা ও হৃদ্যতার ক্ষেত্রে মুমিনদের দৃষ্টান্ত হলো একটি দেহের মতো, যার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হলে অন্যসকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনিদ্র রাত্রিযাপন ও জ্বরাগ্রস্ততার মাধ্যমে একে অন্যকে ডাকে’। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন।
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم : {فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ} سورة آل عمران:159
بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر الحْكِيْمِ, أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .
খুতবায় যা থাকবে :
১. আল্লাহর সাথে মানুষের অন্তর জুড়ে দেয়া,
২. আল্লাহ কেন্দ্রিক ভ্রতৃত্ব কায়েম করার পথ ও পদ্ধতি বর্ণনা ,
৩. সাধারণ মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো ও তাদের দেয়া কষ্ট-নির্যাতনে ধৈর্যধারণের প্রতি উৎসাহ দান
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، وَالصَّلاةُ وَالسَّلامُ عَلَى خَاتَمِ النَّبِيِّيْنَ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ أَجَمِيعَنَ، وَ أَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْد :
প্রিয় মুসল্লী ভাইয়েরা! মানুষের অন্তর জয়ের মাধ্যমসমূহের মধ্যে একটি হলো মানুষের হক রায় যতœবান হওয়া। আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন
(حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ قِيلَ : مَا هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتْبَعْهُ. ‘)
এক মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে। বলা হলো সেগুলো কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, (১) তুমি যখন তার সাথে সাক্ষাৎ করবে, তাকে সালাম দেবে (২) সে যখন তোমাকে দাওয়াত করবে তখন তা গ্রহণ করবে (৩) সে যখন তোমার কাছে নসীহত (পরামর্শ) চাইবে, তখন তুমি তাকে নসীহত করবে (৪) যখন সে হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলবে, তখন তুমি ইয়ারহামুকাল্লাহ বলবে (৫) যখন সে অসুস্থ হবে, তখন তাকে দেখতে যাবে (৬) এবং যখন সে মারা যাবে, তখন তার জানাযা-দাফন কাফনে অংশগ্রহণ করবে’ (মুসলিম)।
ভালো কাজ ও তাকওয়া-পরহেজগারীর ব্যাপারে পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে
{وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ .}
সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর’ (সূরা মায়েদা : ২)।
মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার শরীয়তসম্মত সকল পথ ও পদ্ধতি অবলম্বনের সাথে সাথে সদাসর্বদা যে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। কেননা একমাত্র তিনিই পারেন মানুষের হৃদয়সমূহ পরস্পরে জুড়ে দিতে। আল্লাহর সাহায্য না হলে শত মাধ্যম ব্যবহার করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। ইরশাদ হয়েছে
{لَوْ أَنْفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مَا أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ إِنَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ.}
‘যদি তুমি যমীনে যা আছে, তার সবকিছু ব্যয় করতে, তবুও তাদের অন্তরসমূহে প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন, নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান’ (সূরা আনফাল : ৬৩)।
اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْم إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَارْضَ اللَّهُمَّ عَنِ الْخُلَفَاءِ الْرَّاشِدِيْنَ وَعَنِ الْصَّحَابَةِ أَجْمَعِيْنَ وَعَنِ التَّابِعِيْنَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنَ وَعَنَّا مَعَهُمْ بِمَنِّكَ وَكَرَمِكَ وَعَفْوِكَ وَإِحْسَانِكَ يَا أَرْحَمَ الْرَّاحِمِيْنَ.
হে আল্লাহ! আপনার দীনের খাতিরে মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার সকল বৈধ পথ ও পদ্ধতি আমাদেরকে অবলম্বন করার তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী বানান। মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে আমাদেরকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের তাওফীক দান করুন। হে দয়াময়, পরম দয়ালু! আপনি আমাদের ইবাদত-বন্দেগী কবুল করে নিন। আমাদের সকল ভুলত্র“টি মার্জনা করুন। আমাদের আত্মীয়স্বজন সবাইকে আপনি মা করে দিন। সবাইকে আপনি দীনের পথে পরিচালিত করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
عبَادَ اللهِ رَحمِكُمُ الله : ( إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ.